গল্প-পরিস্হিতির নিষ্ঠুরতা

তুমি যখন ঘুমিয়ে থাকো তখন তোমার মুখ দেখে মনে হয় প্রতিটা দিন নতুন করে তুমি আমার জীবনে জেগে উঠো নতুন শক্তি নিয়ে আমার সাথে পথ চলতে,আমাকে সাহায্য করতে। এখনও আমি সেই বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছি। ভোরে উঠে চিঠিটি যখন তোমার মাথার পাশে রাখতে গিয়েছিলাম তখন ও ঠিক একভাবে এই নিস্পাপ মানুষটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম যে আরেকটি মানুষকে তার মাঝে আগলিয়ে রেখেছে। তুমি কি জান? আজও আমি বিশ্বাস করতে পারছি না এই মানুষটির মাঝে আজ এত পরিবর্তন। তোমার কি সে দিন এর কথা মনে আছে?যে দিন আমি ব্যাংকে প্রথম সরকারি চাকরি পেয়েছিলাম একজন জুনিয়র অফিসার হিসেবে,সবচেয়ে বেশী খুশি তুমি ছিলে আর বলেছিলে তোমার আর কিছুই করতে হবে না, তুমি আজীবন আমাকে আর আমার সন্তানকে আগলিয়ে রাখবে তোমার আচলের মাঝে। আমিই তখন বলেছিলাম যতক্ষণ নতুন মানুষটি আসছে না তুমি নিজের পায়ে দাঁড়াও। তুমি আজ ঠিকই দাঁড়িয়েছ,কিন্তু এ দাড়ানোটা অনেক ভিন্ন। ৭টা দিন আগ পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। কিন্তু যখন রিপোর্টটি পেলাম তুমি একজন মা হতে চলেছো আর আমি বাবা, আনন্দটা আমি তখন রাস্তার পথের ভিক্ষারীর সাথেও শেয়ার করেছি। বাসায় যখন এলাম ততোক্ষণে তোমার সিন্ধান্ত পাল্টে গিয়েছে,তখন বুঝতে পারলাম এ আনন্দ শুধু আমার। তোমার যুক্তিটাও আসলেই অন্যরকম। তুমি বললে আগামী ৬মাস এর মধ্যে তোমার প্রমোশন সাথে গাড়ি!এসব বলে তোমার স্বপ্ন! কিন্তু এ স্বপ্ন এখনই তোমার মুখ থেকে শুনলাম! তোমার স্বপ্নের রাজা আমি ছিলাম আগে, এখন তুমি অনেক বাস্তববাদি,তাই স্বপ্ন দেখা ভুলে গিয়েছ। যাই হোক,৭দিন তোমাকে ভাববার সময় দিয়েছিলাম, ভেবেছ কিনা জানি না,আজকে ৭টা দিন পূর্ণ হল। আমিও ভেবে রেখেছি কি করতে হবে,কারণ আমি তোমাকে আর তোমার গর্ভে আসা আমাদের সন্তানকে ভালবাসি আমার থেকে বেশী, যেকোন ১টি ছেড়ে বেঁচে থাকা আমার মরণের সমান। জানি না আমার সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখতে পারবে কিনা। কিন্তু তোমার কাছে আমার ছোট্ট অনুরোধ একে এই পৃথিবী দেখতে দাও, তুমি শুধু জন্ম দাও, বাকি সব আমার দায়িত্ব,ব্যস্ত থেকো তোমার চাকরি জীবনে। আমি চলে যাচ্ছি, চেষ্টা করছি বদলির জন্য, ইনশাল্লাহ্ হয়ে যাবে। অনুরোধ করব ১টি বার সেই নারীদের দিকে তাকতে যারা মা হওয়ার জন্য ব্যাকুল, কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস! কিন্তু আমার জীবনে এসেছে পরিস্হিতির নিষ্ঠুরতা। সব কিছু তোমার হাতে, এ কষ্ট সহ্য করতে পারব না….ভালো থেকো, নিজের যত্ন নিও…।।